majiya mahi-মাহিয়া মাহি
স্বামী রাকিব সরকারের সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ঢাকাই সিনেমার আলোচিত নায়িকা মাহিয়া মাহি। বিয়ের মাত্র আড়াই বছরের মাথায় এমন সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি।

গত ১৬ ফেব্রুয়ারি রাতে ফেসবুকে এক ভিডিওবার্তায় নিজেই বিষয়টি জানান এই নায়িকা নিজেই। ওই ভিডিওতে মাহি বলেন, স্বামী রাকিবের প্রতি এখনও তার সম্মান রয়েছে।

এ সময় ছেলের জন্য দোয়া চান মাহি। নিজের ছেলেসহ যেকোনো শিশুদের নিয়ে বাজে মন্তব্য না করার জন্য নেটিজেনদের প্রতিও আহ্বান জানান এই চিত্রনায়িকা।

এরপর থেকে ছেলে ফারিশকে নিয়েই সময় কাটাচ্ছেন ঢাকাই ছবির এই নায়িকা। সেসব ছবি ফেসবুকে শেয়ারও করছেন। আবার কখনো কখনো বন্ধুদের সঙ্গে ঘোরাঘুরির বিভিন্ন ছবির সঙ্গে ফেসবুকে মাঝে মধ্যে স্ট্যাটাস লিখছেন মাহি।

দুই দিন আগে মাহি তার ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘একটা আস্থার জায়গা হলেই চলবে, একটা মানুষের মতো মানুষ হলেই চলবে, একটু খালি যত্ন নিলেই চলবে।’

গতকাল মঙ্গলবার চলচ্চিত্রের সহশিল্পী পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে বেশ কয়েকটি স্থিরচিত্র প্রকাশ করে স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘আস্থার আস্তানা।’

এসব স্ট্যাটাসে দেখে মাহির ভক্ত-দর্শকেরা খানিকটা নড়েচড়ে বসেছেন। কেউ কেউ ভাবছেন তাহলে রাকিবের সঙ্গে আলাদা হওয়ার ঘোষণার পর নতুন করে কি আবার জীবন শুরু করতে চান মাহি? এসব স্ট্যাটাস ধরে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে নানা ইঙ্গিতপূর্ণ খবরও প্রকাশিত হচ্ছে।

আর তাতেই বিরক্ত মাহি। মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) মধ্যরাতে এ নিয়ে একটি ভিডিও বার্তা প্রকাশ করেছেন নিজের ফেসবুক পেজে।

ভিডিওর একাংশে মাহিয়া মাহি বলেন, ‘আমি শিল্পী মানুষ। আমার জীবনে প্রেম আছে বলে প্রেমের দুলাইন লিখেছি, দুঃখ আছে বলে দুঃখের দুলাইন লিখেছি, এমনটি নয়। শিল্পী মানুষ, একেক সময় একেক ভাবনা মনে আসে। একটা গান শুনলে গানের ভেতর ঢুকে যাই। সিনেমার কোনো দুঃখের সংলাপ শুনলে দুঃখের মধ্যে ঢুকে যাই। তখন ফেসবুকে ওই সংলাপের, ওই গানের দুলাইন করে লিখি। এগুলো তো জীবনের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। আমি এমন কিছু ফেসবুকে লিখিনি যে নিউজ হতে পারে। এসব নিয়ে কেমন কেমন হেডলাইনের নিউজ হয়, খারাপ লাগে!’

আরেক অংশে বলেছেন, ‘আমি স্ট্যাটাসে “আস্থা” শব্দটি ব্যবহার করেছি, এটি লেখার জন্য লেখা। এটি সত্যি কোনো আস্থার জায়গা খুঁজছি এমনটি নয়। আমি সুন্দর করে দুটি লাইন লিখেছি। ভালো লাগার কারণে এটি লেখা। আর ফেসবুক তো মনের ভাব প্রকাশ করারই জায়গা। কিন্তু আমি যে ভাবনা থেকে লিখি, খবরে প্রকাশ হয় একটু অন্যভাবে, কষ্ট দেয় আমাকে।’

আরও পড়ুন: বিচ্ছেদের ঘোষণা দিলেন মাহি

এই অভিনেত্রীর কথা, সাংবাদিক ভাইয়েরা এমনভাবে বিষয়টি নিয়ে লিখেছেন, মনে হচ্ছে যেন আমি দ্বারে দ্বারে ঘুরছি, আমার কাউকে লাগবে। কিন্তু না, আমার ফারিশ আছে। তাই আপাতত আমার কাউকে লাগবে না। তবে আমরা মানুষ, দিন শেষে একা একা লাগে। এ জন্য কিছু কিছু জিনিস ফেসবুকে লিখি। তার মানে এই নয় যে আমি কাউকে খুঁজছি।’

ভিডিওর অন্য একাংশে মাহির বক্তব্য, ‘মিডিয়াতে আমার কোনো বন্ধু নেই। আর মিডিয়ার কোনো আড্ডাতে, পার্টিতে আমি যাই না। সময় কাটাই না। আমাকে দেখা যায় না। আমি কেন মিডিয়ার কোনো অনুষ্ঠানে যাই না, অংশ নিই না—এ জন্য আমাকে মিডিয়ার মানুষের কাছ থেকে কম কথা শুনতে হয়নি। আমি অবসরে সময় কাটাই আমার ছোটবেলার বন্ধুদের সঙ্গে। আমার মন খারাপ থাকলে তাদের সঙ্গেই আড্ডা দিই, ঘুরতে যাই। মন ভালো থাকলে তাদের সঙ্গে ভাগাভাগি করি সময়টা। আমি যখন মাহি হয়ে উঠিনি, তখন থেকেই তারা আমার সঙ্গে ছিল।’

মাহিয়া মাহি আরও বলেন, ‘আমি রাকিব সরকারকে খুব ভালোবেসেছিলাম। এমন ভালোবাসা দিয়েছিলাম তাকে, সিনেমা থেকে সরে গিয়েছি। কারণ, রাকিব এটি পছন্দ করেননি। মুখে না বললেও বুঝেছি। আমাকে গুলি করে মারতে চাইলেও রাকিব সম্পর্কে বাজে কথা বলতে পারব না। আমি তাকে সম্মান করি। সে আমার ছেলের বাবা।’

ফেসবুকে তার দেওয়া স্ট্যাটাস নিয়ে কোনো নিউজ না করার জন্য অনুরোধ করে ভিডিওর শেষে তিনি বলেছেন, ‘আপনাদের কাছে অনুরোধ, আমার স্ট্যাটাস নিয়ে কোনো নিউজ করবেন না। আমি লিখি এক রকম, নিউজ হলে দেখায় অন্য রকম।’

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর রাকিবকে বিয়ে করেন মাহিয়া মাহি। তাদের একমাত্র ছেলে সন্তানের নাম ফারিশ। সদ্য সমাপ্ত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজশাহী-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নিয়েছিলেন চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি। নির্বাচনি প্রচারণার সময়জুড়েই তার পাশে ছিলেন স্বামী রাকিব। নির্বাচনে ভরাডুবির পর একপ্রকার লোকচক্ষুর আড়ালে চলে যান মাহি।

এর আগে, ২০১৬ সালে সিলেটের ব্যবসায়ী পারভেজ মাহমুদ অপুকে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন মাহি। সেই সংসার টিকেছিল পাঁচ বছর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *